বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় বাংলা একাডেমি পুরস্কার গ্রহণ করলেন কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন তিনি।
সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ৩০ মে ১৯৫৮ সালে শেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। মাতা সারা শহীদুল্লাহ।
সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল মূলত কবি হলেও শিল্প-সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণ করছেন। তার কবিতায় গ্রাম বাংলা থেকে শুরু করে নগরায়ন, নাগরিক জীবন, জীবনের জটিলতা, প্রেম, পরবাস, পরাবাস্তব প্রভৃতি প্রতিফলিত হয়।
বর্তমান বাংলা কবিতার মূলধারাকে তিনি শাণিত করছেন, বাঁক ও বিবর্তনে ভূমিকা রাখছেন। কবিতায় যুক্ত করছেন নতুন টার্ম, নতুন ফর্ম। তার ‘তিন মিনিটের কবিতা’ গ্রন্থটি তার উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি গদ্যের মতো পদ্য নিয়েও গবেষণা করেন। সেজন্য কবিতার বিষয় নিয়ে চিন্তার গভীরে প্রবেশ করেন। মানুষের মনোজগতের অন্তর্নিহিত খনিজ তুলে আনেন ডুবুরির মতো। ফলে দুলালের কবিতা হয়ে ওঠে ব্যতিক্রমধর্মী তথা স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে প্রবাসযাপন করলেও এক মুহূর্তের জন্যেও তিনি শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। বরং প্রবাস জীবনের নানা অনুষঙ্গ তার কবিতাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। কখনো কখনো স্বদেশ ও বিদেশের নানা বিষয়আশয় দ্রবীভূত হয়েছে তার কবিতায়; বলা যেতে পারে, তা এক ধরনের চিন্তার অনুবাদ।
ছাত্রাবস্থায় দৈনিক ইত্তেফাকের মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতার জীবন শুরু। পরে দেশের বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৮০ সালে সরকারি চাকরিতে যোগদান। এক সময়ের জনপ্রিয় বিটিভির শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘দৃষ্টি ও সৃষ্টি’র উপস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন।
প্রবাসী বাঙালিদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন নিউজ এজেন্সি ‘স্বরব্যঞ্জন’, সেই সাথে ‘পাঠশালা’র প্রকাশনা। বর্তমানে তিনি সপরিবারে কানাডায় বসবাস করছেন। দৈনিক ইত্তেফাকের কানাডাস্থ বিশেষ প্রতিনিধি এবং সাপ্তাহিক বাংলা মেইলের উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন এবং ১৯৭১’ নিয়ে গবেষণা করছেন।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ পেয়েছেন ১৬ জন লেখক। তারা হলেন, কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ-গবেষণায় জুলফিকার মতিন। অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে (যাত্রা, পালা নাটক, সাহিত্যনির্ভর আর্টফিল্ম বা নান্দনিক চলচ্চিত্র) মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান-কল্পবিজ্ঞান-পরিবেশবিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী-স্মৃতিকথা-ভ্রমণকাহিনী-মুক্তগদ্যে ইসহাক খান এবং ফোকলোরে তপন বাগচী ও সুমনকুমার দাশ।