নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের শিক্ষক মাজেম আলী একই কলেজের শিক্ষার্থীকে মেয়ে ডেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দীর্ঘদিন প্রেম আর অবৈধ সম্পর্কের পর সম্প্রতি ১০ লাখ টাকা কাবিনে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন।
চলতি বছরের মে মাসে ছাত্রীকে ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। গত মাসে শিক্ষক মাজেম আলীর বিয়ের পুলিশি তদন্তের সময় বিষয়টি সামনে আসে।
কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, শিক্ষক মাজেম সাংবাদিকতার প্রভাব খাটিয়ে রাতেও কলেজের ভেতরে সময় কাটাতেন। সমাজ বিজ্ঞাণ বিভাগের বিভাগীয় কক্ষে ওই ছাত্রীর সঙ্গে মাজেম আলীকে একাধিকবার দেখা গেছে। এ সব বিষয় নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে মাজেম আলী ওই ছাত্রীকে মেয়ে বলে পরিচয় দেন। একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রীকে মেয়ে ডেকে প্রেম এবং বিয়ে কলেজের জন্য মানহানিকর।
এর আগে ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীর সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় সমাজ বিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টে অবস্থান করেন মাজেম। একপর্যায়ে কলেজের পিয়ন এবং অন্য শিক্ষার্থীদের কাছে আটক হন। ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ছাত্রীকে আবাসিক ছাত্রীনিবাস থেকে বহিস্কার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরদিন শিক্ষক মাজেম আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রুহুল করিম আব্বাসী। নোটিশের সদুত্তর দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে সেই তদন্ত আটকে রেখেছেন শিক্ষক মাজেম আলী। মাজেম আলী গুরুদাসপুর উপজেলা যোগেন্দ্রনগর গ্রামের মৃত নকির উদ্দিনের ছেলে। তিনি সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষক। পাশপাশি একটি জাতীয় পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুহুল করিম আব্বাসি জানান, নিজের বিভাগীয় কক্ষে একজন ছাত্রীসহ অবস্থান করেন শিক্ষক মাজেম। এতে কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। এ কারণে সে সময় অভিযুক্ত মাজেম আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন কার্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরবর্তীতে মাজেমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ছাত্রী-শিক্ষকের এক কক্ষে সময় কাটানোর বিষয়টি সামনে এলে শিক্ষক মাজেম আলী ভিডিও বার্তায় ওই ছাত্রীকে মেয়ে বলে পরিচয় দেন। মাজেম আলীকে আদর্শ পিতা বলে আখ্যায়িত করেন ওই ছাত্রী। অথচ তারাই দীর্ঘদিন প্রেম আর অবৈধ সম্পকের পর বিয়ে করেছেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক মাজেম আলী মোবাইল ফোন না ধরায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ দুঃখজনক। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।