শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

যেমন হবে নবজাতকের বালিশ 

আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৪, ২০:০০

পরিবারে নতুন সদস্যের আগমনে মানেই আনন্দ। সময়টা নানা আয়োজনে উৎসব মুখর হয়ে ওঠে। একটা নতুন প্রাণ, নতুন জীবন, স্পর্শকাতর অনুভূতি, প্রথম ছোঁয়া সবই যেন এক ভিন্ন আবেগের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। 

তবে এই সময়ে বাড়িতে নানা রকম উপহারের সঙ্গে আসে নানা পরামর্শও। নানান ধরনের মন্তব্য, নানা উপদেশ, সতর্কতা শুনে নতুন মা অনেক সময়ই বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। নবজাতক শিশুকে নিয়ে চিন্তাভাবনা যেন শেষ নেই এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিন্তা ভাবনা হচ্ছে নবজাতকের মাথার আকৃতি ও বালিশ নিয়ে। 

নবজাতক শিশু জন্মের পর স্বাভাবিকভাবেই ১৮-২০ ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য জরুরি। বাচ্চার ঘুমের সময়টা যেন নির্বিঘ্নে কাটে, সেদিকে খেয়াল রাখার দায়িত্ব মায়েরই। বাচ্চার জন্মের পর তার মাথার আকৃতি নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা  বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করে থাকেন, যেগুলোর বেশির ভাগেরই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবে এই নিয়মগুলো যুগের পর যুগ বিশ্বাস থেকেই পালন করা হয়ে থাকে। যুগ যুগ ধরে শর্ষের বালিশে শোয়ানোর এক বিশেষ প্রচলন রয়েছে আমাদের দেশে। প্রায় সব পরিবারই এই কাজটি করে থাকে।  অনেকেই মনে করেন, শর্ষের বালিশে শোয়ালে বাচ্চার মাথার আকার ঠিকঠাক গোল হয়। নতুন মাকেও তাই চাপ দেওয়া হয় বাচ্চাকে সর্ষের বালিশে শোয়াতে।

তবে চিকিৎসকদের মতে, এই ধারণা পুরোই ভ্রান্ত। আসলে সর্ষের বালিশে শোয়ানোর সঙ্গে শিশুর মাথার গঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। কিংবা মাথার আকৃতি পরিবর্তন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে শর্ষের বালিশে শোয়ালে মাথায় তুলনামূলকভাবে কম চাপ পড়ে। বালিশের ভেতরে সর্ষের বালিশ তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। 

বাচ্চাদের বিছানা বালিশের ক্ষেত্রে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা যেন আরাম পায়। নবজাতকের ত্বক অতি-সংবেদনশীল হওয়ায় সুতি কাপড়ের বিছানা বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। তবে বর্তমানের চিকিৎসকেরা সাধারণত নবজাতক শিশুর জন্য বালিশ ব্যবহার করাকে খুব একটা উৎসাহিত করেন না। কারণ, শিশুর জন্মের পর প্রথম মাসগুলোতে তার ঘাড় ও মাথার সঠিক নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকে। এ জন্য বাচ্চার নাক বা মুখ যদি বালিশ বা অন্য কোনো কিছুতে আবৃত হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সে তার মাথা সরিয়ে ফেলতে পারবে না। এতে শিশুদের দমবন্ধ হয়ে বরং বিপদ হতে পারে। এছাড়াও মাথা বা ঘাড়ের পেশিতে আঘাত লাগতে পারে।  বেশির ভাগ শিশু-বিশেষজ্ঞদের মতে, বাচ্চাকে সমতলে, দৃঢ় পৃষ্ঠের ওপরে শুইয়ে রাখা উচিত। তারা দুই বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে বালিশ ব্যবহারে খুব একটা উৎসাহিত করেন না।

যা খেয়াল রাখবেন 

নবজাতকের মাথার আকৃতির সঙ্গে মাথার নিচের বালিশটি উপযুক্ত মাপের হওয়া উচিত। পুরনো নরম পাতলা সুতির কাপড় পেঁচিয়ে গোল করেও বালিশ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে শিশুর মাথা আকৃতি গোল থাকবে। আর বালিশের কভারও পাতলা সুতি কাপড়ের হলে ভালো। নবজাতক শিশুর জন্য সুগন্ধি বা পালকযুক্ত বালিশ ব্যবহার না করাই ভালো। এতে করে শিশুর অ্যালার্জির সমস্যাসহ শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারে। নবজাতক শিশু যদি কটে ঘুমায়, তাহলে এমন বালিশ হওয়া উচিত তা যেন কটে আঁটোসাঁটোভাবে এঁটে যায়। তাই আগে থেকে মাপ নিয়ে সেই ধরনের বালিশ বানিয়ে নিতে পারেন। 

ইত্তেফাক/এআই

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

 
unib