শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নাগেশ্বরীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, পানিবন্দী অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২০, ১৯:১৭

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এখনও পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। কৃষি ও মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

দ্বিতীয় দফা বন্যায় গত ৩ দিন ধরে পানি বাড়ার পর বৃষ্টি না হওয়ায় মঙ্গলবার রাত থেকে আর বাড়েনি। ফলে অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। 

এদিকে বুধবার সকাল থেকে রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করছে। তবে অপরিবর্তিত বন্যায় বিস্তীর্ণ জলরাশির মধ্যে ছবির মত এখনও ভাসছে অর্ধ ডুবন্ত ঘর-বাড়িগুলো। রাস্তা-ঘাটের ওপর দিয়ে অনেক উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্যানুযায়ী চলতি এ বন্যায় উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৪৮টি গ্রাম সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ হাজার ৫২৮ পরিবারের ৪৪ হাজার ৭৯৯ জন মানুষ। তৃণভূমি তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুকনো খড় ভিজে নষ্ট হওয়ায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোখাখারুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে পরপর দুই দফায় বানভাসিদের মাঝে ৯৬ মে.টন চাউল, নগদ ৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার ৩৮০ পরিবারের শিশু প্রতি ৫০০ গ্রাম গুড়া দুধ, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি করে সুজি শিশু খাদ্য বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। গো-খাদ্যের জন্য ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা দিয়ে চাহিদার সংকুলান না হওয়ায় আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে পেলে বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন: কুমিল্লায় লাঞ্ছিতের মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় প্রকৌশলী

ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্য সম্পদের। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী ইতিমধ্যে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে ১০০ হেক্টর রোপা আমন বীজতলা, ১২০ হেক্টর আউশ ধান, ২৪০ হেক্টর জমির পাটক্ষেত ও ৫৫ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত। 

উপজেলা সিনিয়র কৃষি অফিসার শামসুজ্জামান জানান, দ্রুত পানি নেমে না গেলে এর অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যাবে। তবে পাট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া এর আগেও প্রথম দফা বন্যায় কিছু বীজতলা ও সবজির ক্ষতি হয়েছে। 

মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী, ৬৬৪ পুকুর তলিয়ে বেরিয়ে গেছে ১২৮.৭৮ মে.টন মাছ ও ৪৩ লক্ষ পোনা। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা। 

উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান জানান, করোনা দুর্যোগের মধ্যে বন্যার এ প্রকোপে দিশেহারা এ এলাকার মানুষ। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি আমরা ব্যক্তি উদ্যোগেও বানভাসিদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছি। প্রায় প্রতিদিন আমি বন্যা প্লাবিত এলাকা ঘুরে তাদের খোজ-খবর নিচ্ছি।

ইত্তেফাক/এএএম