কিশোরগঞ্জে স্কুলছাত্র হত্যা: মেয়ের মৃত্যুদণ্ড, মায়ের যাবজ্জীবন

কিশোরগঞ্জ শহরের আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তোফায়েলকে হত্যার দায়ে এক নারীকে মৃত্যুদণ্ড ও তার মাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। রবিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের প্রথম আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, জুয়েনা আক্তার এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলো তার মা রিনা আক্তার। রায় ঘোষণার সময় রিনা আক্তার কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
তার মেয়ে জুয়েনা আক্তার জামিনে গিয়ে পলাতক হয়। বিচারক উভয়কে এক লাখ টাকা করে জরিমানা প্রদান করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক জরিমানার টাকা আদায় করার ভিকটিমের পরিবারকে প্রদান করার জন্য রায়ে উল্লেখ করা হয়। এই মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি রিনা আক্তারের পুত্র রাসেল ভুঁইয়া নাবালক হওয়ায় বর্তমানে তার বিচার কার্যক্রম শিশু আদালতে চলমান রয়েছে।
আদালত ও সরকারি আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১০ মার্চ সন্ধ্যায় জেলা শহরের মণিপুরঘাট এলাকার বাসিন্দা মো: আওলাদ হোসেনের পুত্র ও আজিমউদ্দন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তোফায়েল পূজার অনুষ্ঠান দেখার জন্য বত্রিশ আখড়ায় যায়। সেখানে সমবয়সী রাসেল ভুঁইয়ার সঙ্গে তোফায়েলের কথা কাটাকাটি হয়। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় জনৈক আফিলের বাসার সামনে পৌঁছামাত্র রিনা আক্তার, জুয়েনা আক্তার ও রাসেল ভুঁইয়া একসাথে লাঠি নিয়ে তোফায়েলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাথায় লাঠির আঘাতে তোফায়েল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে তোফায়েলকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে এবং পরে রাতেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকাল নয়টার দিকে সে মারা যায়।
এ ব্যাপারে নিহতের পিতা মো: আওলাদ হোসেন বাদী হয়ে রিনা আক্তার, জুয়েনা আক্তার ও রাসেল ভুঁইয়াকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে সকলের বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ ইমাম এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ক্ষিতীশ দেবনাথ।
ইত্তেফাক/জেডএইচডি