মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব, আমাদের অহঙ্কার। 'ইলিশের বাড়ি' খ্যাত চাঁদপুর এক সময় বিশ্বব্যাপী ব্রিটিশ-ভারতের 'গেটওয়ে টু ইস্টার্ন ইন্ডিয়া' নামে পরিচিতি ছিল। প্রচীন এই শহরটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নানান দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে অন্যতম চাঁদপুর শহরের মুক্তিযোদ্ধা সড়কের পাশের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের সামনে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা লেকটি। নান্দনিক সুন্দরের অপূর্ব নিদর্শন আর সবুজ জলরাশির দীর্ঘ এক লেক এটি।
শহরের বুক চিরে বয়ে চলা এই লেকটি বর্তমানে কয়েক ভাগে বিভক্ত। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে এই লেকটিতে নির্মিত হয়েছে স্মারক ভাস্কর্য 'অঙ্গীকার'। সিমেন্ট, পাথর আর লোহা দিয়ে তৈরি বেদীসহ এই ভাস্কর্যের উচ্চতা ১৫ ফুট।
১৯৮৯ সালে স্থাপিত হয় মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘অঙ্গীকার’। জেলার প্রথম এই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের নকশায় নির্মিত হয়। অপরাজয়ে বাংলার স্থপতি তিনি। 'অঙ্গীকার'-এ হাতে অস্ত্র ধরে রাখা এই ভাস্কর্য দেশ স্বাধীন করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অঙ্গীকারের প্রতীক।
স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক এস এম শামছুল আলম। পরে এটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এটি চাঁদপুর জেলার কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধ হিসেবে বিবেচিত। প্রতিবছর মহান স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের সূচনায় রাত ১২টা ১ মিনিটে এর বেদীতে মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গীকৃত বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
লেখক: মোঃ রনি, শিক্ষার্থী, হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, চাঁদপুর