শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কেমন কাটবে এবারের ঈদ

পবিত্র ঈদুল আজহা সমাগত। করোনা ও বন্যা পরিস্থিতিতে এবারের উৎসব আপনার কেমন কাটবে? এ ব্যাপারে টেলিফোন ও ইমেইলে প্রাপ্ত পাঠকের অভিমত আজ প্রকাশিত হলো

আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২২, ০৯:১১

সংকুচিত অর্থনীতির চলমান প্রভাব, নিত্যপণ্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি, করোনা অতিমারির চতুর্থ ঢেউয়ের নব্য আস্ফালন এবং সাম্প্রতিক সময়ে বন্যাদুর্যোগে সৃষ্ট বহুমাত্রিক অভিঘাত প্রভৃতি আসন্ন ঈদ উদ্যাপনে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। জীবনের জন্য আনন্দ অনিবার্য। নিরানন্দ, নিষ্পেষণ আর ঘটমান নেতিবাচকতার সমারোহ পেরিয়ে এবারের ঈদ হোক শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবার জন্য অনাবিল খুশি, নির্মল আনন্দ আর সামাজিক সম্মিলনের দারুণ উপলক্ষ্য। 
নাজিফা নাওয়ারাহ, সদর, রংপুর

 

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে। নিকটজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে মানুষ এখন ব্যস্ত। বিগত প্রায় দুই বছর করোনা পরিস্হিতিতে অনেকেই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কোরবানি দিতে পারেনি। এ বছর আবার দেখা দিয়েছে বন্যা। করোনা মহামারি, বন্যা ও বৈশ্বিক মন্দায় বেচে থাকাটাই যেন বড় কঠিন বিষয়। সুতরাং এমন পরিস্হিতিতে ঈদুল আজহা পালন অনেকের জন্য দুঃসাধ্য বলে মনে করছি। তারপরেও সবকিছু মেনে নিয়ে আসন্ন ঈদুল আজহা আশা করি ভালোভাবে পালন করতে পারব।
মো. খায়রুল ইসলাম (ফুল), আরাপপুর, ঝিনাইদহ

 

ঈদুল ফিতরের আনন্দোত্সব কাটানোর প্রায় দুই মাস পর চলে এসেছে ঈদুল আজহা। কোরবানির উত্সব আয়োজন ও সমারোহ উদযাপন জাতিগত আচার-আচরণের নির্ণায়ক। বন্যা, করোনা পরিস্হিতির মধ্যে এই কোরবানি উত্সব সত্যিই অনেকের জন্য প্রায় কষ্টসাধ্য। কারণ, আর্থিক মানসিক দুটোই অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠবে। বিশেষ করে প্রান্িতক মানুষের জন্য বেশ সামর্থ্যহীন। —আব্দুল মান্নান জমাদার, উজিরপুর, বরিশাল

 

একদিকে ঘরমুখো মানুষের ভিড় জমে উঠেছে, অন্যদিকে হাটে জমে উঠেছে পশুর বেচা কেনা। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সড়ক-মহাসড়ক সংস্কারে হাত দিতে হবে সবার আগে। ভাঙাচোরা রাস্তা যেন কোনো দুর্ঘটনার কারণ না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। ঈদযাত্রায় ভোগান্তি দূর করা হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
মো. আরিফুর রহমান, দেলপাড়া, নারায়ণগঞ্জ

 

পবিত্র ঈদুল আজহা আসন্ন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সর্বস্বান্ত হয়েছে মানবজাতি। এর মধ্যে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে দেখা দিয়েছে মারত্মক বন্যা। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে রয়েছে অনাহারে-অর্ধাহারে। এসব মানুষের মনে ঈদোত্সব বলে কিছু নেই। করোনা, বন্যায় অধিকাংশ মানুষের মনে ঈদ উল্লাসের দোলা লাগছে না। এমতাবস্হায়, ঈদোত্সব ভাগাভাগি করে নিতে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
ফারুক আহমেদ, বাগমারা, রাজশাহী

 

ঈদুল আজহা ও কোরবানির ঈদ সমাগত। ঈদুল আজহার গুরুত্ব অবশ্যই অপরিসীম। তবে দুঃখজনক হল, অনেক মানুষ বন্যাকবলিত রয়েছে। সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচিত এদের পাশে দাঁড়ানো। এটাই হবে সবচেয়ে বড় আত্মত্যাগের বিষয়।
মো. ইফতেখার হোসাইন লিটন, হাইমচর, চরভৈরবী, চাঁদপুর

 

বাংলাদেশে চতুর্থতম করোনার ছোবল আর তুমুল বন্যার মধ্যেই আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা, যা আমাদের মুসলমানদের বড় আনন্দ আর উত্সবের দিন। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় তো আর কারো হাতে নেই। সুতরাং এর মাঝেই আমাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে উত্সব উদযাপন করতে হবে। শত ঝামেলা থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে মানুষ শহরে ছেড়ে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়িতে কোরবানি করার জন্য ছুটতে শুরু করেছে। ত্যাগের মহিমায় বন্যাকবলিত মানুষকে সাথে নিয়ে সবাই ঈদের আনন্দ ভাগাভাবি করবে বলে আমি মনে করি।
আলহাজ মো. হাফিজুল ইসলাম চৌ. (হিফজু), হাউজিং স্টেট, সেক্টর নম্বর ২,রাজশাহী ৬২০২

 

ঈদুল আজহা সমাগত। নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন জেলা রয়েছে বন্যা-অবস্থায়। যে কোনো দুর্যোগে স্থানীয় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের উচিত সবার আগে দুর্যোগপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এবারের ঈদ উত্সবে সবাই অসহায়দের পাশে দাঁড়াবে—এটাই প্রত্যাশা।
আলমায়াজী, ফুলবাড়িয়া, সাভার

 

ঈদুল আজহা আসন্ন। বৈশ্বিক সংকটকালে কৃচ্ছ্রসাধনের সিদ্ধান্ত সময়োচিত অবশ্যই। সম্প্রতি বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নেয়া সময়ের ব্যাপার। আমরা মনে করি, এই কোরবানির সময়ে তাদের জন্য একটু সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বিশেষ করে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া একান্ত জরুরি।
তাপস হালদার, কাকরাইল, ঢাকা

 

পবিত্র ঈদুল আজহা সমাগত। বৈশ্বিক করোনার মধ্যে দেশে বহু জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে, আবার নতুন করে চতুর্থতম করোনা ও বন্যা প্রকোপ ছড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে অনেকেই ভালো নেই। আর্থিকভাবে সংকটে রয়েছে দেশের অনেক মানুষ। তাই সামর্থবান ব্যক্তিদের উচিত হবে, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের সাহাঘ্য সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থার মাধ্যমে ঈদের উত্সবকে রাঙিয়ে তোলা।
আনতারা আনিকা লাবণ্য, ইডেন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, আজিমপুর, ঢাকা

 

ঈদুল আজহা পালনে মানুষ গ্রামের বাড়ি ছুটছে আপনজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে। বৈশ্বিক করোনার পর সিলেটে বন্যা এবং চতুর্থতম করোনার প্রাদু‌র্ভাব সত্যিই আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে। অনেকেরই সামর্থ্য নেই ঈদ আনন্দ উপভোগ করার। বিশেষ করে, বন্যার্তদের কষ্ট, বেদনার চিত্র দেখে সব আনন্দ বিলীন হয়ে যায়। তাই এদের পাশে দাঁড়ানোই হচ্ছে বড় কথা। আসুন, আমরা সবাই অংশগ্রহণ করি তাদের জন্য।
শিশির, পিলখানা, ঢাকা

 

আসছে কোরবানির ঈদ। ছুটছে মানুষ গ্রামের বাড়িতে। বৈশ্বিক করোনা, বন্যাকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্বই হচ্ছে বড় মনুষ্যত্ব। আসুন, আমরা তাদেরকে নিয়ে ভাবি। তাদের জন্য সাহাঘ্য সহযোগিতার হাত বাড়িায়ে দিই।
সৈয়দ বজলুল করিম, ধানমন্ডি, ঢাকা

 

প্রতিটি উত্সব আমাদের একতা, ঐক্য, বড় ও মহত্ হতে শেখায়। ঈদের আনন্দে দল-মত-নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে ভাগ করার মধ্যেই সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ। পবিত্র ঈদুল আজহার মাধ্যমে সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধন রচিত হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রকৃত অর্থে ঈদ উদযাপন করার তৌফিক দান করুন, আমিন।
মেনহাজুল ইসলাম তারেক, পার্বতীপুর, দিনাজপুর

 

সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় উপর্যুপরি বন্যায় জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরপর এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা। আমরা এমনিতেই শোকাহত স্বজন হারানোর বেদনায়। এই দুঃখ নিয়েই ঈদ পালন করতে হবে।
সালেহা আফরীন বেবী, শিবগঞ্জ, সিলেট

 

শুধু মহামারি করোনা আর বন্যাই নয় আরো কয়েকটি কারণে এবারেও ঈদেও লক্ষ লক্ষ পরিবারের লোকজন তাদের গ্রামের বাড়িতে যেতে পারবেন না। রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পূর্বের তুলনায় আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ ছোট পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। চাকরিজীবীরাও হতাশায়। বেতন অনিয়মিত। ট্রান্সপোর্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। রাস্তায় দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে। এসবকে মানিয়ে নিয়েই করতে হবে ঈদ।
সাইফুল ইসলাম তানভীর, গুলশান, ঢাকা

 

আর কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উত্সব ঈদুল আজহা। এবারের ঈদের আনন্দ যখন মানুষের দোরগোড়ায় তখন উত্তর পূর্বাঞ্চল ঘটে যাওয়া স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। তবে, ঈদুল আজহা মানেই কোরবানি বা উত্সর্গ, তাই এবারের ঈদ কাটুক ত্যাগের মাধ্যমে। যারাই বিত্তবান আছেন, সবাই এগিয়ে আসুন মানুষের পাশে।
মো. জিকরুল ইসলাম ইমরান, বনানী, ঢাকা

 

করোনার পাশাপাশি এবার দেশের বেশ কিছু এলাকায় বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন। আসন্ন ঈদুল আজহা নিয়ে বন্যায় সংকটপূর্ণ বানভাসি সাধারণ মানুষের এবারের ঈদ যেন গত বছরগুলোর অন্যান্য ঈদ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাই এবারের ঈদ উপলক্ষে আলাদা কোনো চিন্তা নেই খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের। আবহমানকালের এমন ধর্মীয় সংস্কৃতির মধ্যেই আমাদের জন্ম ও বসবাস। অনেকেই জাঁকজমকপূর্ণ নিয়মের ব্যত্যয় করেনি কখনো, এবারও তার ব্যতিক্রম আশাও করা যায় না। অন্যদিকে নতুন করে করোনা সংক্রমণের হার ও মৃত্যু পুনরায় বাড়লেও মানুষের মধ্যে এখন আর এ নিয়ে কোনো ভয় বা আতঙ্ক নেই বললেই চলে। তবে নিজের ও পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সুরক্ষিত থাকা এবং দূরত্ব বজায় রেখে ঈদ জামাতসহ প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব।
শান মোহাম্মদ রিজওয়ান, সিএসই বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন, টেকনোলোজি অ্যান্ড সাইন্স, ঢাকা

 

পবিত্র ঈদুল আজহা ত্যাগ ও অনাবিল আনন্দের উপলক্ষ্য হলেও সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বেশ কিছু অঞ্চলের মানুষের জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত। এর সঙ্গে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণের ৪র্থ ঢেউয়ের ক্রমবর্ধমান দাপট মানুষের অবাধ জীবনযাত্রাকে আবার কঠোর বিধিনিষেধের বেড়াজালে মুড়িয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে বাজেট পরবর্তী নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অপ্রত্যাশিত মূল্যবৃদ্ধির চাপ সামলাতে হিমশিম খাওয়া সিংহভাগ সাধারণ মানুষ কোরবানির পশুর চড়া দামের কারণে ঈদের আনন্দ হতে বঞ্চিত হতে বাধ্য। এক্ষেত্রে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতা রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি ও বিত্তবানদের আর্থিক ও মানবিক সহায়তার সমন্বিত সুষম বণ্টন অপরিহার্য।
আবু ফারুক, বনরুপা পাড়া, সদর, বান্দরবান

 

এবারের ঈদে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে ব্যাপক বন্যা। কারণ, এখন মানুষ নিজের জীবন নিয়েই ব্যস্ত। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অনেকেই এবার কোরবানি দিতে পারবেন না। ঐসব এলাকায় আবার অনেকে হয়তো আগের তুলনায় কোরবানি দেওয়ার পরিসর কমিয়ে ফেলবেন। অপরদিকে দেশে করোনা শনাক্তের হার ও মৃতু্যও বাড়ছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার অংশ হিসেবে মাস্কও পরছেন না অধিকাংশ মানুষ। গত বছর করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং মানানোর যে প্রবণতা ছিল, এবার তা মোটেই নেই। করোনা ভাইরাস আতঙ্ক তার ওপর বন্যায় ক্ষতির কারণে ঈদ এবার অনেক মানুষের জন্য আগের মতো খুশির বার্তা বয়ে আনতে না পারলেও, সামর্থবানরা তাদের মতো করে ঈদ উদ্যাপন করবেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও বাড়ছে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যু। তাই ঈদে এসব দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা সমীচীন হবে বলে মনে করি।
শাহনেওয়াজ মোহাম্মদ রুসলান, হক ভিলা, ৪/১, মেরাদিয়া, খিলগাঁও, ঢাকা

ইত্তেফাক/এসটিএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন