পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মানুষ প্রচণ্ড শীতে জবুথুবু হয়ে পড়েছে। সর্বত্রই শৈত্য প্রবাহ ও হিমেল বাতাসে প্রচণ্ড শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তাপমাত্রা নেমে আসার পাশাপাশি প্রচণ্ড হিমেল হাওয়ায় অচল হয়ে পড়েছে এলাকার সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবন যাত্রা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ্ বলেন, এ পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) রেকর্ড করা হয়েছিল ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ হচ্ছে।
হিমালয়ের হিমেল হাওয়ার প্রভাবে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। সামনে আরও কয়েক দিন শৈত্যপ্রবাহ থাকবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
এদিকে, তাপমাত্রার অবনতি আর হাড়-কাঁপানো শীত সহজেই কাবু করছে এলাকার জনজীবন। রাত থেকে সকাল অবধি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে উত্তর থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাস।
অন্যদিকে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও ঘন-কুয়াশার কারণে খেটে খাওয়া মানুষজন বিশেষ করে ভ্যান রিকশা শ্রমিক ও কৃষক-কৃষাণীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কনকনে ঠাণ্ডায় বৃদ্ধ ও শিশুদের মাঝে ডায়রিয়া সহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন ধরণের রোগ দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঠাণ্ডা নিবারণের জন্য গরীব ও মধ্যবিত্তরা ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকান গুলোতে কম দামে ঠাণ্ডা নিবারণের পোশাক কিনতে ভীর করতে দেখা গেছে। অনেকেই রান্নায় চুলায়, খড়কুটো দিয়ে হাট-বাজারের দোকানের পুরাতন কাটুন কাগজে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিনই শীতজনিত রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
বোদা উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার জন্য যতটুকু কম্বল বরাদ্দ এসেছে তা ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাঝে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বহ্নি শিখা আশা বলেন, প্রচণ্ড শীতে উপজেলার জন্য যে সব কম্বল বরাদ্দ এসেছে তা বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করেন আরও কম্বল বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। বোদা উপজেলার শীতার্ত মানুষের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানকে শীতবস্ত্র দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।