প্রায় ৪৭ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সংকটময় পরিস্থিতিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংগঠনিকভাবে বিবেচনা করলে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবিও বহন করে আসছেন বণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে। অথচ এই নেতা উপেক্ষিতই রয়েছেন।
রাজনৈতিক জীবনে নাটোর-৪ আসনে নৌকার মাঝি হতে অন্তত আটবার দলীয় মনোনয়ন দাবি করেছেন। একবারও মেলেনি বঙ্গবন্ধুর নৌকা প্রতীক। অথচ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতা পেরোতে হয়েছে।
আওয়ামী লীগ থেকে তিনি ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার দলে অবদান থাকায় পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক মতভেদের কারণে দলের লোকজনই নৌকার বিপরীতে ভোট করে সতন্ত্র প্রার্থীকে বিজয়ি করেছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে আক্ষেপ করে এসব কথাই বলছিলেন গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারের মরহুম হরিবউল্লাহ শপিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত ওই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই নেতা নাটোর-৪ আসন থেকে আবারও নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, তারা বংশ পরম্পরায় বঙ্গবন্ধুর অনুসারি। বঙ্গবন্ধু আদর্শেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। এখানো তিনি দলের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মানুষের কল্যাণে কাজ করায় তার কোনো প্রচারণা নেই। কারণ যারা কাজ করেন, তাদের প্রচারণা থাকে না। তিনি ব্যক্তিগতভাবেও প্রচারবিমুখ মানুষ।
এই নেতা বলেন, গত ৩০ আগস্ট নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম আসনের সংসদ সদস্য আবদুল কুদ্দুসের মৃত্যু আসনটি শূন্য হয়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নির্বাচন কমিশন খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ে তফসিল ঘোষণা তিনি উপনির্বাচনের জন্য প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পাননি। এ কারণে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রচারমাধ্যমে তার নাম যথাযথভাবে আসেনি। ফলে উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি তিনি। আটবার মনোনয়নবঞ্চিত হলেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ভোটের মাঠে লড়াই করতে চান তিনি।
ওই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম, হাজী রজব আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমানসহ অনেকে। এ সময় মনোনয়ন প্রত্যাশী জাহিদুল ইসলামের অনুসারীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুলের সরবরাহ করা জীবন বৃত্তান্ত থেকে জানা গেছে, জাহিদুল ১৯৭৬ সালে পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি, গুরুদাসপুরের বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে যুক্ত থেকে অন্তত ১৮টি সেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এছাড়া চলনবিল অঞ্চলের সর্ববৃহত চাঁচকৈড় হাটের প্রতিষ্ঠাও করা হয়েছিল তারই পরিবার থেকে।