ইংল্যান্ডে চলছে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদার এই আসর আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। যেখানে উড়ন্ত ফর্মে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দুই সেঞ্চুরি ও দুই হাফসেঞ্চুরিতে ব্যাটিংয়ে রয়েছেন সেরাদের মধ্যে। বল হাতেও নিয়েছেন পাঁচটি উইকেট। উড়ন্ত সাকিবই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়, প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফের এক বিশ্লেষণে এমন বক্তব্য উঠে এসেছে।
টেলিগ্রাফের সাংবাদিক টিম উইগমোরের বিশ্লেষণের শুরুতেই লিখেছেন, এ বছর বিশ্বকাপের ১৫০ জন ক্রিকেটারের মধ্যে তিনি নিঃসন্দেহে তার দেশের সেরা ব্যাটসম্যান ও বোলার। তিনি সাকিব আল হাসান, ২০১৯ বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত তিনিই কোনো বিতর্ক ছাড়াই সেরা খেলোয়াড়।
তবে বিস্ময়করভাবে সাকিবকে অবমূল্যায়নের একটা প্রবণতা আছে। ভক্তরা তার দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ও আইপিএল উপভোগ করে। আইসিসির র্যা ঙ্কিংয়ে ২০১৫ সালে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই শীর্ষে ছিলেন সাকিব।
আরও পড়ুন : অর্থ আত্মসাৎ: খুলনাঞ্চলের সম্পাদকের জামিন না মঞ্জুর
এরপরও সাকিব কেন বিশ্বব্যাপী সেভাবে মূল্যায়িত হন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর কারণ সম্পর্কেও একটা বিশ্লেষণ উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, সাকিব বড় কোনো দলের খেলোয়াড় নন। এ কারণেই তিনি বেশি উপেক্ষিত। এর মধ্যে একটি উদাহরণ ধরা যাক, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া মাত্র একটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশের সঙ্গে।
সাকিবের ক্যারিয়ারে দুটি ঘটনাকে উল্লেখযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সাকিবের ক্যারিয়ারে ২০০০ সালের দুটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। ওই বছর বাংলাদেশ যখন টেস্ট মর্যাদা পায়। ওই বছরই ১৩ বছর বয়সে বিকেএসপিতে ভর্তি হন তিনি। টানা ৪৫ ম্যাচ হারের সেই কঠিন সময়ের দুই বছর পর সাকিবের অভিষেক। তখন দুই-একটি ম্যাচ জেতা শুরু করেছে। শুরুতেই স্বভাবজাত ব্যাটিং আর কৌশলী বোলিং দিয়ে দলে অপরিহার্য হয়ে ওঠেন সাকিব।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে ‘কোচের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে সাকিবের ছয় মাস নিষিদ্ধ থাকা’র প্রসঙ্গও উঠে আসে। এখন সাকিব পরিণত এবং টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছেন।
সাকিবকে নিয়ে বলা হয়েছে, দলের সবচেয়ে কঠিন ভূমিকা নেন সাকিব। পাওয়ার প্লেতে নিয়মিত বল করেন। শেষদিকেও তাই। আর ওয়ানডেতে তিন নম্বরে ব্যাটিং শুরু করে ১৯ ম্যাচ খেলে গড় রান ৫৯.৬৮। এর মধ্যে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা সেঞ্চুরিও রয়েছে।’
সাকিবের সাদামাটা উদযাপনের কথা উল্লেখ করে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের কঠিন লক্ষ্য পার করে দেওয়ার পরও তার উদযাপন ছিল নিতান্তই স্বাভাবিক। দলকে জেতানোর সতীর্থ ব্যাটসম্যান লিটন দাসের সঙ্গে শুধু হাত মেলান। আসলে যে কোনো দলের বিপক্ষে নিজের সেরাটা দেওয়াই যেন তার ধ্যানজ্ঞান।
ইত্তেফাক/কেআই