শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মধুপুরে আনারস ও কলা বাগান উচ্ছেদের  প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:০৬

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আনারস ও কলা বাগান উচ্ছেদ করে বনায়নের প্রতিবাদে আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করার ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা বনবিভাগের উচ্ছেদ বন্ধ এবং ফল বাগান ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। 

দোখলা রেঞ্জ অফিসার আব্দুল আহাদ জানান, টাঙ্গাইল বনবিভাগ এবার মধুপুরে বনাঞ্চলে অংশীদারের ভিত্তিতে ১০০ হেক্টর জমিতে উডলট মডেলের বনায়ন করছে। এ জন্য জবরদখল হওয়া বনভূমি পুনরুদ্ধার চলছে। দোখলা, জাতীয় সদর উদ্যান ও চাড়ালজানি রেঞ্জে প্রায় ৪০ একর জবরদখলী বনভূমির কলা ও আনারস বাগান কেটে বনজ চারা লাগানো হয়েছে। আমলিতলা এলাকার কথিত ভূমিদস্যু লকশর আলী মেম্বারের বেদখলে রাখা ৭০ একরের মধ্যে ৫ একর পুনরুদ্ধার করে কাজু বাদামের বাগান করা হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন। গত সোমবার দোখলা সদর বিটের পেগামারি এলাকায় বাসন্তি রেমা নামক এক গারো রমণীর দখলে থাকা ৪০ শতাংশ জমির কলা গাছ কেটে বনায়নের উদ্যোগ নিলে গারো সম্প্রদায়ের সাথে সংঘাত শুরু হয়। বন বিভাগের অফিস ঘেরাও, হামলা, স্টাফকে মারধরের ঘটনা ঘটে। মধুপুর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান তিনি। 

অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত বাসন্তি রেমার অভিযোগ, উত্তরাধিকার সূত্রে কয়েক দশক ধরে আবাদ করা ফলবাগানে বিনা নোটিশে অভিযান চালিয়ে বন বিভাগ কয়েক হাজার কলা গাছ কচুকাটা করে। ফলে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি গারো পল্লীতে উচ্ছেদ বন্ধ এবং ফল বাগান ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। 

শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতার হোসেন জানান, মধুপুর বনাঞ্চল জবরদখল প্রবণ এলাকা। ৪৫ হাজার একর বনভূমির প্রায় ২৫ হাজার একর জবরদখলে চলে গেছে। এসব বনভূমি পুনরুদ্ধার করে উডলট মডেলের বনায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার কথা। কিন্তু বন প্রশাসন সেটি না করে কোটি কোটি টাকার ফলবান বাগান কচুকাটা করছেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। 

আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার মিরপুরে গৃহবধূ হত্যার বিচারের দাবিতে মরদেহ নিয়ে মানববন্ধন

মধুপুর ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল জানান, বন বিভাগ প্রভাবশালী জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ না করে বনায়নের নামে দরিদ্র গারোদের আবাদি জমি ও ফল বাগান সাবাড় করছে। এতে গারোদের মধ্যে উচ্ছেদ আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

মধুপুর বনাঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক জামাল হোসেন তালুকদার জানান, সরকার জবরদখল হওয়া বনভূমি পুনরুদ্ধার এবং তাতে পুনঃবনায়নের তাগিদ দিচ্ছেন। কিন্তু মাঠ লেভেলে কাজ করতে গেলে এলাকাবাসীরা জোটবদ্ধ হয়ে বাধা দিচ্ছেন। 

মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট ইয়াকুব আলী জানান, ফল বাগান কর্তন এবং উচ্ছেদের প্রতিবাদে আজ বুধবার গারো ও বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল শেষে মধুপুর-শোলাকুড়ি সড়কের দোখলা চৌরাস্তা অবরোধ করেন। টানা দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মধুপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের নেতা অজয় এ মৃ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল, সম্পাদক হেলেন জেত্রা, গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জনজেত্রা ও ইউপি চেয়ারম্যান আখতার হোসেন প্রমুখ। 

ইত্তেফাক/এএএম