রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলে ঢাকা ও কুমিল্লা অঞ্চল ভিত্তিক দুই গ্রুপের মধ্যে 'ফেসবুকে পোস্টে হাহা রিয়্যাক্ট' দেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হারুন উর রশিদ মারামারির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হলের গণরুমে এ ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন- মোহাম্মদ রাকিব, ওয়ালিদ সাইফুদ্দিন, ইফতি ও রোফি ওসমানী। এদের মধ্যে ওসমানী কুমিল্লার ও বাকিরা ঢাকা অঞ্চল গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তারা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর।
জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষার সময় (১০ সেপ্টেম্বর) ভর্তিবিষয়ক একটি গ্রুপে কুমিল্লা গ্রুপের সাজিদ এবং এনামুল ফেসবুকে পোস্টে দিলে ঢাকা গ্রুপের মুশফিক, এনামুল, হাসনাত সহ অন্যরা তাতে 'হাহা রিয়্যাক্ট' দেয়। পরবর্তীতে কুমিল্লার অনুসারীরাও হাহা দিতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই রেশ ধরে রাতে গণরুমে দুই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ফের কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়।
'ঢাকা অঞ্চল' গ্রুপের আহত শিক্ষার্থী ইফতি বলেন, 'গতকাল রাতে কুমিল্লা এলাকার ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী আমাদের সঙ্গে কথা বলতে আসে। এসময় আমরা রুমে ৪-৫ জন ছিলাম। একত্রে বসে আলোচনা করার জন্য আরও বড় ভাইদের ডাকতে ফোন করছিলাম, এর আগেই তারা অতর্কিতে ব্যাট, স্ট্যাম্প, কাঠ দিয়ে মেরে আমাদেরক আহত করে।
'কুমিল্লা অঞ্চল' গ্রুপের মাইনুদ্দিন বলেন, 'আমাদের অঞ্চলের সজীব ফেসবুকে ভর্তি বিষয়ক পোস্ট দিয়েছিল। ঢাকা অঞ্চলের একজন এতে হাহা রিয়্যাক্ট দেওয়ায় বেশ তর্কাতর্কি হয় এবং ঢাকা অঞ্চলের প্রায় ২০জন এসে আমাদের হুমকি দেয়। গতরাতে বিষয়টি মিমাংসা করতে আমরা একসাথে বসতে গেলে ঝামেলা হয় এবং একপর্যায়ে ঢাকা অঞ্চলের ইফতি কাঠ দিয়ে আমাদের রোফী ওসমানীর চোখের নিচে ফাটিয়ে দেয়। তার তিনটি সেলাই লেগেছে।'
ইতোমধ্যে 'দুই অঞ্চলের অনুসারীরা' শেরেবাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক সাব্বির আলম বলেন, 'মধ্যরাতে গণরুমে মারামারির ঘটনায় দুই পক্ষেরই লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ঘটনা, সেখানকার প্রক্টর ঘটনাটি জানেন। তিনিই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হারুন উর রশিদ বলেন, 'নবাব সিরাজুদ্দৌলা হলে রাতে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এই বিষয়ে আমরা অবগত আছি, রাতে হলের সহকারী প্রোভোস্ট এবং দুইজন সহকারী প্রক্টর ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব।'